বিশ্ব ভালোবাসা দিবস মানে প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসা.! ভ্যালেন্টাইন ডে রিমাইন্ডার

valentines-day-reminder

 "রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু বইখানা অনন্ত- যৌবনা- যদি তেমন বই হয়।" স্কুল জীবনে সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রবন্ধে এ কথা গুলো পড়েছিলাম। বই পড়ার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে তিনি এ কথাগুলি লিখেছিলেন।


সত্যিকার অর্থেই একটি ভালো বই অনেক ভাবনার খোরাক যোগাতে পারে। মানুষের মন, আবেগ পরিবর্তনশীল। একেক বয়সে বা একেক সময়ে একেক ধরনের বই মনকে টানে, পড়তে ভালো লাগে। আবার কোন কোন প্রয়োজনে ও মানুষকে কিছু বই পড়তে হয়। সময়ের সাথে হয়তো সেই সব নির্দিষ্ট বইয়ের প্রয়োজন ও ফুরিয়ে যায়। কিন্তু  ভালো বইগুলি প্রকৃত পক্ষেই অনন্ত যৌবনা। যেগুলোর প্রয়োজন কখনোই ফুরিয়ে যাবে না। 


আচ্ছা মানুষ কি অনন্ত যৌবনা..? 

এবার যদি লেখকের অন্য কথাটি নিয়ে ভাবি। রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে,প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে! উনি খাবারের স্থায়িত্ব বা মানুষের সৌন্দর্য যে ক্ষণস্থায়ী সেটা বোঝাতে বলেছেন। অথচ এই ক্ষণস্থায়ী যৌবনের প্রিয়/প্রিয়ার পেছনে ছুটতে গিয়ে বোকা মানুষ অনন্ত যৌবনের সঠিক পথ হারাচ্ছে! 

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাঙালীও বিশেষ একটা দিনে রুটি, মদের মতোই ক্ষণস্থায়ী একটা প্রিয় বা প্রিয়ার পেছনে একটা দিন ব্যয় করে! অবশ্য একটা দিন বললে ভুল বলা হবে। একটা দিনকে সেলিব্রেট করার জন্য অনেক গুলো দিনের প্ল্যানিং থাকে। কি পরবে,  কিভাবে প্রিয় মানুষটির জন্য সাজবে,  কোথায় যাবে,  কি খাবে, রেস্টুরেন্টের আলো আঁধারি পরিবেশে কি কি বলবে... সর্বোপরি প্রিয় মানুষটিকে খুশি করার জন্য কি গিফট দেবে... এ ধরনের কত কত প্ল্যান..!

ক্ষণস্থায়ী প্রিয়/ প্রিয়া বলার কারণ, এ যুগের হারাম সম্পর্কগুলো যত তাড়াতাড়ি গড়ে, ঠিক ততো তাড়াতাড়িই আবার ভাঙে। ভালো গিফট দেয়নি তো ব্রেকআপ, দামী রেস্টুরেন্টে নেয়নি তো ব্রেকআপ, ঐ ছেলে/মেয়ের ছবিতে লাইক দিয়েছে তো ব্রেকআপ.. এ রকম পান থেকে চুন খসলেই ব্রেকআপের যুগ চলছে!

তো এখন ইনস্ট্রাগ্রাম, টুইটার, ফেসবুক সহ হরেক রকম মিডিয়ার যুগে ছেলে/মেয়ের কি কোন অভাব..? একজনের সাথে ব্রেকআপ হয়েছে তো কি হয়েছে..? আদি যুগের মতো দেবদাস সাজার টাইম আছে নাকি এখন.? 

আর যদিও বা কারো সাথে সুপারগ্লুর মতো সম্পর্কটা টিকে যায়, অর্থাৎ হারাম, হালালের তোয়াক্কা না করে যারা এ ধরণের হারাম সম্পর্ক বজায় রাখে, তারা কি ভাবে, আমি যে এ কাজটা করছি এটা কি হালাল..?  তারা আসলে তখন বুঝতে পারে না, ভালো- খারাপের ভাবনা আদৌ ভাবেও না।  কারণ তখন তারা শয়তানের ধোঁকায় মোহাচ্ছন্ন হয়ে থাকে। ইসলামী অনুশাসনের অনেক দূরে থাকে। আর তাই শয়তান তাদের কাছে খারাপ কাজকেও ভালো বলে উৎসাহিত করে, শোভনীয় করে তোলে!

রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ -"একজন পুরুষ একজন নারীকে নিয়ে একাকী হলেই শয়তান তাদের তৃতীয়জন হয়ে যায়।" [তিরমিযী]

বিয়ের আগের বা বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কগুলো, হানড্রেড পারসেন্টই হারাম এবং আল্লাহর অবাধ্যতা। 

উমর (রা হতে বর্ণিত, রসূল সল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ "কোন পুরুষ যখন কোন নারীর সাথে একান্তে থাকে, তখন তাদের মাঝে তৃতীয় জন হিসেবে উপস্থিত হয় স্বয়ং শয়তান। তাদের মাঝে ভাবাবেগকে উৎসাহিত করে এবং উভয়ের মাঝে খারাপ কুমন্ত্রণা দিতে থাকে এবং সর্বশেষে লজ্জাকর পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটায়।" আসলে সকল হারাম সম্পর্কগুলো এক ধরণের ব্যভিচার। আর কখনও তা চূড়ান্ত ব্যভিচার পথে নিয়ে যায়। 
আল্লাহ্ সুবহানাহু তা'আলা পবিত্র কুরআনে স্পষ্ট ভাবে বলেনঃ "আর অশ্লীল কাজের নিকটবর্তী হবে না- তা থেকে যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে।" [সূরা আল আন'আমঃ ১৫১]
তিনি অন্যত্র আরও বলেনঃ আর তোমরা ব্যভিচারের কাছে যেয়ো না, নিশ্চয়ই তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ।" [সূরা বনী ইসরাঈলঃ ৩২]
আল্লাহর অবাধ্যতা করার পর স্বাভাবিক ভাবেই এসব সম্পর্কে জড়িয়ে তারা করে মা-বাবার অবাধ্যতা।  আর যদি কোন মা-বাবা জানেন তাদের সন্তানরা এ ধরণের সম্পর্কে জড়িত। কিন্তু তাদের ফিরিয়ে আনার বা সংশোধনের কোন পদক্ষেপ না নেন তবে সে মা-বাবা দাইয়্যুস হিসেবে গণ্য হবেন।  আর দাইয়্যুসের স্থান তো জাহান্নাম। 
আবার হয়তো মা-বাবা পরিস্থিতির চাপে বিয়েতে রাজি হন ঠিকই; কিন্তু দুনিয়াতেই হয়তো মা-বাবার মনের চাপা কষ্টের মাশূল তাদের ভোগ করতে হয়। মা-বাবা ক্ষমা না করলে তাদের বদদু'আ আখিরাতে তো জমা থাকবেই। 

আচ্ছা! "ভ্যালেন্টাইন ডে" কারা সেলিব্রেট করে.? বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ম্যারিড কাপলের চেয়ে আনম্যারিড কাপলরাই কিন্তু এ "ডে" বেশি সেলিব্রেট করে। তাদের চোখে থাকে তখন রঙ্গীন চশমা। যে চশমা দিয়ে তারা পৃথিবীর কোনকিছু বা প্রিয়/প্রিয়ার কোনকিছুতে কোন ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যায় না। সব মোহময়, ভালবাসাময়, অতি সুন্দর!

ছেলেদের কাছে সবচেয়ে যোগ্য, অতি প্রিয় কে থাকে..?  গার্লফ্রেন্ড না বৌ..?  অবশ্যই গার্লফ্রেন্ড। কত কেয়ার নেয়..!  মেয়েদের ক্ষেত্রেও হয়তো তা। কিন্তু যখন বৈধভাবে পাওয়া হয়ে যায়, তখন কেন যেন সব অযোগ্যতা ধরা পড়ে। আগ্রহ, ভালবাসা কমতে থাকে। অথচ বিয়ের আগে হয়তো বলেছিল ওকেই আমার চাই,  ওকে  ছাড়া তো আমার চলবেই না। আবার বিয়ের রাতেই হয়তো পরম তৃপ্তিতে মনে মনে বলেছিলঃ -"আমি পাইলাম,  ইহাকে পাইলাম।"

কিন্তু বিয়ের পরে আস্তে আস্তে মনে হয় একে তো আর হারানোর ভয় নেই! সে কাগজে কলমে লিখিত। কেয়ার করাই যাবে..!  ভালবাসা যাবেই একটু একটু। ভালবাসা প্রকাশ না করলেই কি.? ও তো আমার হয়েই গেছে!
আস্তে আস্তে দিনগুলো রংধনুর সাত রঙে রঙীন থেকে ধূসর, বিবর্ণ হয়ে আসে। একদিনে শতবার জান, জান বলতে বলতে, ভালবাসি ভালবাসি বলতে বলতে যে কণ্ঠ শুকিয়ে যেতো, সেই কণ্ঠ দিয়ে যেন মাসে আর একবারও ভালবাসার কথা আসে না, জান বলে ডাকা হয় না!

শুধু ত্রুটি গুলি চোখে পড়ে। ও এরকম কেন..? আগে তো এমন ছিল না..? আমার সাথে তো এমন করতো না..! জীবনটা আগের মতো উথাল পাথাল ভালবাসাময় বা রোমাঞ্চকর লাগে না! সব হিসেব এলোমেলো লাগে। মেয়েদের কষ্টটা সবচেয়ে বেশি।  সবার কথাকে অগ্রাহ্য করে যাকে জীবনের পরম সম্পদ মনে করেছিলো, তার এ অচেনা রূপটি সম্পর্কে এখন সবাইকে কিভাবে বলবে..? তিল তিল করে জমতে জমতে কষ্টগুলো একসময় অসহনীয় তীব্র আকার ধারণ করে!

সবার জীবন হয়তো একরকম নয়! কিন্তু এমন অনেক অনেক ঘটনা জেনেছি! সবার অবাধ্যতা করে বিয়ে করে বিয়ের আগের অতি মধুর সম্পর্কটা অতি তিক্ত হতে বেশি দিন সময় লাগেনি। কারণ ওদের বিয়ের পেছনে যে হারাম গল্প,  মা-বাবার দীর্ঘশ্বাস আর অশ্রু জড়িত ছিল। এরা দুনিয়াতে লাঞ্ছনাকর জীবন যাপন করে।  আর অনন্ত জগতের লাঞ্ছনাকর শাস্তি তো জমা থাকেই; যদি তারা তাওবা না করে।

কেউ কেউ বলেছেন মা-বাবার পছন্দ মতো বিয়ে হলে কি সবাই সুখী হয়..?  হ্যাঁ! সুখ এবং দুঃখ তো সব আল্লাহ প্রদত্ত। কিন্তু এজন্য উভয়েই যদি বৈধ ও পবিত্র ভাবে কুরআন-হাদীসের আলোকে তারা দাম্পত্যজীবন সাজাতে পারে, আল্লাহ তো তাদের সুখী করবেনই। এ সম্পর্ক গুলোতে আল্লাহর রহমত যেমন থাকে, তেমনি সবার দুআ ও ভালবাসাও থাকে। 

আমাকে একবার এক বোন লিখেছিলেনঃ
"তাকে কয়েক বছর ধরে একটা ছেলে ভালবাসার কথা বলে আসছে। এতবছরে সেও কিছুটা দূর্বল হয়ে পড়েছে। তাই সে ঠিক করেছে  মা বাবার পছন্দ মতো না করে নিজের পছন্দেই বিয়ে করবে। তো মা-বাবা বাধ্য হয়ে তার মতামত মেনে নিয়েছে। এখন কি করা উচিত আমার কাছে জানতে চেয়েছে।" 

তার জবাবে আমি লিখলামঃ
প্রথমতঃ এ ধরণের সম্পর্ক তো হারাম। আর যে ছেলেটা এরকম অজানা, অচেনা মেয়েকে শুধুমাত্র ফেসবুকের পরিচয়েই এতখানি ভালবাসতে পারে, এ ভালবাসা কতটা সত্যি? সে যে আরও কয়েক জনের সাথে একই ব্যাপারটা করছে না এটাই বা কতটুকু সত্যি..? ধরলাম সত্যি! প্রচন্ড ভালবাসে!

কিন্তু মানুষের মন তো পাখির পালকের মতো।  হাওয়ায় উল্টাতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি মানুষের ভালবাসা পরিবর্তন হতেও সময় লাগে না। আজ যার জন্য নিজের মা-বাবার ইচ্ছের বিরুদ্ধে সে যাচ্ছে, সেটা  তার জন্য ভালো নাও হতে পারে। মা-বাবার ইচ্ছেতে করলে হয়তো সেটা ঠিকই তার জন্য ভালো হতে পারে। কারণ, মানুষের জন্য কোনটা কল্যাণকর এবং কোনটা অকল্যানকর এটা একমাত্র আল্লাহ-ই জানেন। এক্ষেত্রে অন্ততঃ আল্লাহর অবাধ্যতা এবং মা-বাবার অবাধ্যতা তো করা হবে না!

আর একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোন কিছু ত্যাগ করলে, আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা তার বিনিময়ে এমন উত্তম কিছু দেবেন, যা সে কখনোই কল্পনাও করতে পারে নি।" 

আল'হামদুলিল্লাহ্..! বোনটি এ কথাগুলোতে সন্তুষ্ট হয়েছিল। ওর মন অনেক শান্ত এবং হালকা হয়েছে বলে আমাকে জানিয়েছিল। 

বোনটিকে আরো কিছু কথা বলেছিলাম। আর তা হলোঃ "যদি এ ধরণের সম্পর্কে কিছুটা দূর্বলতার সৃষ্টি হয়, তবে অতি অবশ্যই সব ধরণের যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে হয়। ইস্তেখারার সালাত পড়তে হয়। তখন আল্লাহই জানিয়ে দেবেন ব্যাপারটা ভালো না খারাপ হবে। মা-বাবাকে জানাতে হবে। বিয়ের ক্ষেত্রে মা-বাবার পাশাপাশি ছেলে/মেয়ের পছন্দেরও গুরুত্ব আছে। তবে তা অবশ্যই বৈধভাবে হতে হবে। 
আর তাই নিজের পছন্দের কাউকে পেতে হলে তাহাজ্জুদের সরে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার কাছে এভাবে দুআ করতে হবে "হে আল্লাহ! ওকে সঙ্গী হিসেবে পাওয়া যদি আমার জন্য কল্যাণকর হয় তবে তুমি তা-ই আমাকে দিও এবং কল্যাণকর না হলে আমার মন থেকে তাকে মুছে দাও!" কখনোই এভাবে বলা উচিত নয়-  "হে আল্লাহ! ওকে আমি চাই,  তুমি আমাকে দিও বা দাও।"

আল্লাহ্ হয়তো তখন ঠিকই আপনার দু'আ কবুল করে ওকে পাইয়ে দেবেন। কিন্তু সারাজীবন আপনাকে কাঁদতে হবে। আর তখন হয়তো বলবেন কেন দিলেন আল্লাহ্..! 

সর্বোপরি বলতে চাই, বিয়ের আগের বা বিয়ের পরবর্তীতে হারাম সম্পর্কগুলো থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখে সব ধরণের সুন্দর আবেগ- অনুভূতি এবং ভালবাসাগুলি জমা রাখুন হালাল অর্থ্যাৎ বৈধ সঙ্গীটির জন্য। যাকে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা যত্ন করে আপনার জন্যই সৃষ্টি করেছেন। দেখুন আল ওয়াদুদ কত সুন্দর ভাবে বলে রেখেছেনঃ 
তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।" [সূরা আর- রুমঃ ২১]

কেন আরেকজনকে জান, জান বলতে বলতে টায়ার্ড হয়ে অতঃপর নিজের হালাল সঙ্গীটিকে তার প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করবেন..? তখন কোন প্রিয় নামে ডাকা, বৌয়ের জন্য মাঝে মাঝে ফুল কিনে আনা আর হয়তো হয়ে ওঠবে না। অন্যত্র এসব করতে করতে বড় ক্লান্ত যে..! অথচ স্বামীস্ত্রী একে অন্যের জন্য ভালবাসার চাদর হওয়া অতি গুরুত্বপূর্ণ। 

দুনিয়া এবং আখিরাতের কল্যাণের জন্য অতি অবশ্যই সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলাকে ভয় করে এসব হারাম সম্পর্কে যেসব ভাই/বোন জড়িত আছেন, অবশ্যই তা থেকে ফিরে আসার চেষ্টা করুন। মন হয়তো আদ্র হবে, চোখ হয়তো সিক্ত হবে। কিন্তু আল্লাহর কাছে সাহায্য চান, তিনি সাহায্য করবেন ইন শা আল্লাহ্। আর সেই সাথে আশা রাখবেন তিনি যে আল- ওয়াদুদ! প্রেমময়। তিনিই তো সমস্ত ভালবাসার নির্মাতা..! আর একমাত্র তিনিই পারবেন আপনার জীবনকে ভালবাসায় কানায় কানায় ভরিয়ে তুলতে। 

যাকে প্রচন্ড ভালবাসেন, বা দূর থেকে কাউকে পছন্দ করেন! কিন্তু আল্লাহর ভয়ে কাছে যাননি। শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তাকে ছেড়ে এলে বা ভুলে গেলে হয়তো আল্লাহ্ জান্নাতে তাকেই আপনার সঙ্গী করবেন।  কারণ জান্নাত তো এমন একটা স্থান যেখানে নারী/পুরুষ নির্বিশেষে কারো কোন ইচ্ছা -ই দয়ালু আল্লাহ অপূর্ণ রাখবেন না। একবার ভাবুন তো কত সুন্দর সে স্বপ্ন হবে..! কত সুন্দর সে মূহুর্ত হবে..!  প্রিয় মানুষটিকে অনন্ত জীবনের জন্য জান্নাতে পেলে..! যেখানে আর কোন লুকোচুরি, কোন কষ্ট থাকবে না। 

আর তাই আল্লাহর কাছে আন্তরিক ভাবে তাওবা করুন। কারণ ফিতনার এ সময়ে অনেকে অনেক ভুল করতেই পারে। কিন্তু যারা তাওবা করবে তারাই উত্তম বলে বিবেচিত হবে।
রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন "আদম সন্তানের প্রত্যেকেই ভুলকারী। আর তাদের মধ্যে তারাই উত্তম যারা তাওবাকারী।" [তিরমিযীঃ ২৪৯৯]

আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা তো প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন, তাওবাকারীদের মাফ করবেন। আরো দারুণ আশা দিয়েছেন তাদের গুনাহ গুলিকে সওয়াবে পরিবর্তিত করে দেবেন। যেন কোন গুনাহগার বান্দাই  হতাশ না হয়। আল্লাহ্ বলেছেনঃ "হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজদের উপর(জু লুঠ  ম) বাড়াবাড়ি করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ সকল পাপ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।"  [সূরা আয-যুমারঃ ৫৩]

তাই  আল্লাহর কাছে আকুল হয়ে তাওবা করুন, কাঁদুন। তিনি যে আর- রহমান..! আল-গাফুর। আল- কারীম!

আবার সেই প্রথম কথাগুলোতে  ফিরে আসি..
"রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু বইখানা অনন্ত- যৌবনা- যদি তেমন বই হয়।" 

যত যা-ই  বলা হোক না কেন! মানুষ কিন্তু সুন্দরকে ভালবাসে। আর যে কারো মনের সৌন্দর্য তো ধীরে ধীরে প্রকাশিত হয়। হ্যাঁ... আপনার প্রেয়সী বা স্ত্রী অতি সুন্দরী ,অতি প্রেমময়ী। কিন্তু স্ত্রী বা প্রেয়সীর সৌন্দর্য কিন্তু চিরস্থায়ী নয়। কেউ-ই কিন্তু অনন্ত যৌবনা নয়। এ কথা ছেলেদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। একসময় সবার সৌন্দর্য-ই ফিকে হয়ে আসে, কালো চোখ দুটি ঘোলাটে হয়ে আসে!

তাই এদের চিরস্থায়ী সুন্দর, চির যৌবনা হিসেবে পেতে হলে অতি অবশ্যই শাশ্বত, কল্যাণকর সে-ই মহা গ্রন্থটিকে আপনার, আমার এবং আমাদের সবার অতি আপন করে নিতে হবে এবং মহান আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া  তা'আলাকে ভালবেসে উনার প্রেরিত জীবনবিধান অনুসারে জীবন পরিচালিত করলে অবশ্যই আল্লাহ্ ইহজগত এবং পরজগত দুজগতেই আমাদের সবাইকে ভালবাসবেন এবং আমাদের মনের লুকোনো সব ইচ্ছে গুলো পূরণ করবেন!

আর যাকে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা একবার ভালবাসবেন তার চেয়ে পরম সৌভাগ্যবান বা সৌভাগ্যবতী আর কে হতে পারবে...! 

● ইয়া আল্লাহ তা‘আলা! আমাদের সবাইকে সঠিক ভাবে জানার ও বোঝার এবং সঠিক ও পরিপূর্ণ ভাবে তা পালন করার তাওফীক দান করুন এবং সকল প্রকার অন্যায় এবং সকল পাপাচার থেকে পরিপূর্ণ ভাবে হিফাযত করুন এবং আমাদেরকে ক্ষনা ও কবুল করুন (আ-মীন)

About the author

Taosin Bro Bd
Taosin Bro BD – Get the latest tech tutorials, web development guides, Blogger tips, and creative tools. Learn how to customize your blog, create engaging content, and enhance your online presence with expert tips and resources.

Post a Comment